আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কি পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে চলছে সর্ব মহলে ভাবনা ও জল্পনা কল্পনা।
ক্ষমতাসীন কিংবা ক্ষমতাহীন, সরকারী দল কিংবা বিরোধী দল, সকলের দৃষ্টিতেই এখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
আর চিরাচরিত ভাবে এই আলোচনা ক্রমশই ছড়িয়ে পরবে জন থেকে জনে, হাটে, মাঠে, ঘাটে কিংবা চায়ের আড্ডায়।
বাংলাদেশের মানুষ আগাগোড়া ই রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনায় উৎসাহী।
যার ফলশ্রুতিতে অতিতে নির্বাচনের দিনগুলোকে মানুষ ঈদের আনন্দের সাথে উদযাপন কিংবা তুলনা করতো।
ভিন্ন দল, ভিন্ন প্রার্থী কিংবা ভিন্ন মত পথের হওয়া সত্বেও নির্বাচন ছিলো সকলের কাছে উদযাপনের বিষয়। সেই উৎসবমুখর নির্বাচনের আমেজ গত হয়েছে প্রায় এই দেশের মানুষের কাছ থেকে।
নির্বাচনকালীন সময়ে নিজ প্রার্থীর পক্ষে খেয়ে না খেয়ে রাতদিন যারা এতকাল ব্যস্ত থাকতো তারা এখন জীবন-জীবিকার কাজে সেই সময় ব্যয় করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে কিংবা পক্ষ বিপক্ষের ঝামেলায় নিজেকে জড়াতে চান না। এমন বাস্তবতা ই রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদগন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভাবছে।
যাহোক, মানুষকে আবার উৎসবমুখর ভাবে নির্বাচনমুখী করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি প্রণয়ন যা মানুষের আস্থা তৈরী করবে যে, সে নির্দিধায় তার ভোট প্রদান করতে পারবে এবং তার প্রদানকৃত ভোটের প্রতিফলন ঘটবে অর্থাৎ তার প্রদত্ত ভোটটি যথাযথ গণনার মধ্য দিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষেই ভোটটি যোগ হবে এই নিশ্চয়তা প্রদানের মধ্যদিয়ে। এক কথায় তার ভোটটি বিফলে যাবেনা এমন পরিস্থিতি বিদ্যমান হলেই কেবল ভোটারগন আবার উৎসব নিয়ে নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবে।
সে লক্ষ্যে বিভিন্নজন বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়ে থাকেন বিভিন্ন সময়, তবে আমি মনে করি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেবল সকল পক্ষ তথা সরকারী ও বিরোধী দল, এককথায় সব পক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করে সেই সরকারের উদ্যোগে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন এবং তার অধিনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এখন সময়ের দাবী। আর এটা বিদ্যমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য তুলুনা মুলক সহজ পথ।
আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছি, এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের মাঝে জাতীয় ঐক্য অনিবার্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পর বর্তমান প্রজন্ম ও দেশবাসীর চাওয়া হচ্ছে, অতীতের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, কাঁদা ছুড়াছুঁড়ি, ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের উর্ধে উঠে রাজনৈতিক দলগুলো একটি জাতীয় ঐক্যমত্য তৈরী করবে যা বাংলাদেশকে আগামীর বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম করে তুলবে।
অন্যথায় আগামীতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতির যে মেরুকরণ হতে চলেছে সেখানে আমাদের অনৈক্য ও বিভাজন দেশকে পেছনে ফেলে দিবে। আর একটি বিভাজিত জাতি কখনও উন্নয়নের শিখড়ে পৌঁছতে পারেনা।
শেষ কথা; রাজনীতি যদি দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য হয় তাহলে সংকট প্রলম্বিত না করে নির্বাচন পদ্ধতি কি হবে তা নিয়ে সকল রাজনীতিক দল মিলে এখনি একটা ঐক্যমতে পৌঁছা উচিত।
কেননা, সকল রাজনীতির উর্ধে এই দেশটি আপনার, আমার, আমাদের সকলের, যা আমরা এক নদী রক্ত ও লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করেছি।