গাজীপুরের টঙ্গীতে বাসায় ডাকাতি করতে গিয়ে একটি সংঘবদ্ধচক্র এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৬ মে ভোর রাতের এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই নির্যাতনের শিকার কিশোরীর মামা টঙ্গী পূর্ব থানায় ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা করেছেন। ১৭ বছর বয়সী ওই ছাত্রী স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। সে মামার পরিবারের সঙ্গে থাকে। মামলার এজাহারে স্কুলছাত্রীর মামা জানান, ভোররাত ৩টার দিকে ছয়-সাতজন ডাকাত ঘরে ঢুকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পেছন থেকে হাত বেঁধে ফেলে তাকে। এ সময় তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে ছুরি দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলা হয়। এরপর ডাকাত দল তার মায়ের ঘরে গিয়ে মুখে কাপড় দিয়ে পেছন দিক থেকে হাত বেঁধে ফেলে এবং ভাগনির মুখে কাপড় দিয়ে চিৎকার করতে নিষেধ করে। পরে ডাকাতরা ঘরের আলমারি থেকে ২৫ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। চলে যাওয়ার আগে তিন ডাকাত ভাগনিকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং তার নানিকে শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এজাহারে ডাকাত দলের সদস্যদের হাতে পিস্তল, চাকু, শাবল, লোহার রড ও কাটার ছিল বলে উল্লেখ্য করা হয়। ডাকাত সদস্যদের বয়স আনুমানিক ১৮-৪৫ বছর। এদিকে একই রাতে
পাশের আরেকটি বাড়িতে ডাকাতি করে ওই ডাকাত দল। তারা ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে ৭০ হাজার টাকা ও এক ভরি স্বর্ণ লুট করে। এ ছাড়া বুধবার রাত ২টার দিকে টঙ্গী বাজার মুন্সিপাড়া রোডের মোল্লাবাড়িতে আরেকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাদের ফ্ল্যাটে কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার দিন পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইর কর্মকর্তারা তদন্ত করে চলে যাওয়ার পর ওই দিন রাতেই বাসায় তালা লাগিয়ে ঢাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায় ভুক্তভোগী পরিবার। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে তিনটি ডাকাতির ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক মাসে এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, কিশোর গ্যাং ও হত্যাকান্ডের মতো অপরাধ বেড়েছে। টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, ‘ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে কাউকে এখনও গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। শিগগিরই এ ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করা যাবে।’ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, ‘চলতি বছর মেট্রোপলিটন এলাকায় আটটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে গত তিন মাসেই ছয়টি ডাকাতি হয়েছে। ছয়টি ডাকাতির ঘটনাই ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে। পুলিশ প্রত্যেকটি ঘটনাকেই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে।’
Leave a Reply