মাদারীপুরের কালকিনিতে মালিকানা জমি দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির লোকেরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ইচ্ছে মত কমিউনিটি ক্লিনিক ও এক ব্যক্তির মালিকানা জমিতেই ভবন করতে শুরু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি কমিটির সদস্যদের জানালে তারা কর্নপাত না করায় আদালতের দ্বারস্ত হয় নাজমুল হাসান মস্তফা নামে এক ভুক্তভোগী। পরে আদালত ভবন নির্মানের কাজ বন্ধের জন্য স্থিতি আদেশ প্রদান করে। আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রতিনিয়তই কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন ওই ভুক্তভোগী। এছাড়া তার মালিকানা জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি তুলে নিয়ে বড় বড় গর্ত করার অভিযোগও করেন তিনি। দ্রæত তার জায়গা ফাকা করার দাবি জানান ওই ভুক্তভোগী। দায় এড়াতে কয়েক যুগ জায়গাটি স্কুলের দখলে আছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি। তবে আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। প্রধান শিক্ষকের দাবি আদালতের নোটিশ পাওয়ার পরে কাজ বন্ধ রয়েছে। আদালত যা রায় দিবে তা মেনে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর কালকিনি উপজেলা উওর রমজানপুর নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ কিছু সদস্য এবং প্রধান শিক্ষকসহ এলাকার প্রভাবশালীদের যোগ সাঁজসে মালিকানা জমিতে স্কুল ভবন নির্মান করা হচ্ছে। যেখানে ভবন নির্মান করা হচ্ছে সে জমিটির বিআরএস রেকর্ড অনুযায়ী ৫৯৯ নং খতিয়ানে ৭৫২৪ নং দাগের ৬শতাংশ জমির মালিক উত্তর রমজানপুর এলাকার ইয়সিন মোল্লার চার পুত্র আবুল হোসেন মোল্লা,আজিজ মোল্লা,মোয়াজ্জেম মোল্লা ও মহসীন মোল্লা ।তাদের মধ্যে আজিজ মোল্লা,মোয়াজ্জেম মোল্লা থেকে ৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন একই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম হাওলাদারের ছেলে নাজমুল হুসাইন (মস্তফা)। সেই জমিতে শিক্ষ প্রকৌশ দপ্তরের একটি বহুতন ভবন নির্মান করার জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়। সেই জমিটি নিজ মালিকানার হওয়ায় নাজমুল হুসাইন(মস্তফা) ম্যানেজিং কমিটিসহ স্থানীয়দের জানালেও তারা বিষয়টি কর্মপাত করেনি। । পরে তিনি মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার ভিত্তিতে আদালত ভবন নির্মান কাজের স্থিতি আদেশ দেয়। তবুও সেখানে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগী নাজমুল হুসাইন মস্তফার। তবে নোটিশ পাওয়ার পরে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলটি বর্তমানে যেখানে রয়েছে সেখানে স্কুলের নামে কোন জমি নেই।
অভিযোগকারীর দাদা ভাষাই হাওলাদার ওরফে বাদশা মিয়া ১৯৭৩ ওই স্কুলের নামে দলিল করে দেন। স্কুলে দান করা জমিটিতে স্কুলটি নির্মান করা হয়নি। এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন। বিষয়টি সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে জোড় দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী। তবে স্কুলটি নির্মান করার সময় কেউ অভিযোগ করেনি কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ধবংসের জন্য চক্রান্তের অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির। তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আদালতের রায় মেনে নিবেন বলে জানান।
ভুক্তভোগী নাজমুল হুসাইন (মস্তফা) বলেন, ৩ শতাংশ জমি তিনি ক্রয় করেছেন। সেই জমিতে ভবন নির্মান কাজ শুরু করার সময় তিনি বাধা দেন কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিতে কর্নপাত করেননি। উল্টো তার জমি হতে ভেকু দিয়ে মাটি খনন করে বড় গর্তের সৃষ্টি করেছেন। তার পরে তিনি আদালতে মামলা করলে আদালত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তার পরেও সেখানে কাজ চলছে। তিনি দাবি করেন তার জমিতে যেন ভবন নির্মান করা না হয়। তিনি আরও জানান, স্কুলের নামে সেখানে কোন জমি নেই, স্কুলের জমি অন্য জায়গায়।
শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী নাজমুল হাসান বলেন, আদালতে মামলার বিষয়টি তিনি জানেন না। এমন কোন ঘটনার কথা তাকে জানানোও হয়নি। তবে খোজ নিয়ে বিষয়টির সত্যতা পেলে সে আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নোটিশ পাওয়ার পর থেকে নালিশী জমিতে কাজ বন্ধ রয়েছে। আদালত যে রায় দিবেন তিনি তা মেনে নিবেন। বর্তমানে সেই জমিতে কোন কাজ হচ্ছে না।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আয়নুর নাহার বলেন, ৫০ বছর আগের স্কুল । যখন স্কুল নির্মান করা হয়েছিল তখন কেউ বাধা দেয়নি। বর্তমানে একটু জমি কিনে ভবন নির্মানে বাধা দেয়া হয়েছে। আদলতে মামলা হলে কোর্টের রায়ের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেই জমিটুকুতে কাজ বন্ধ আছে,বন্ধ থাকবে।
Leave a Reply