মাদারীপুরের ডাসার থানায় ওসি হিসেবে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারিতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন হাসানুজ্জামান। তিনি যোগদানের আট মাসের মাথায় জনগণের প্রত্যাশা প্রায় শতভাগ পূরণ করেছেন। সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের আখড়া বলে পরিচিত এ থানা এখন অনেকটাই অপরাধমুক্ত। এতে করে থানা এলাকার চিত্র পাল্টে গেছে। ইতোমধ্যে তিনি তার কর্মদক্ষতার মাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছেন সর্বমহলে। এর আগেও তিনি বিভিন্ন থানা থেকে ভালো কাজে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিলেন। তবে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম বার ও মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মস্তফা রাসেল পিপিএমবারের দিক নির্দেশনায় তিনি এ কাজ করে আসছেন। বর্তমানে এ থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা সাভাবিক রয়েছে। এবং মামলা শুন্য কোঠায়।
ওসি হাসানুজ্জাসান থানায় যোগদানের পর থেকেই কমে গেছে দালালদের দৌরাত্ম্য। প্রাথমিক অবস্থায় দালালদের সতর্ক করে থানায় তদবিরের জন্য না আসতে বলে দিয়েছেন তিনি। সেবা প্রার্থীরা দালাল ছাড়াই নির্দ্বিধায় থানায় আসা-যাওয়া করতে পারছেন। জিডি ও মামলা করতেও এখন আর টাকা লাগছে না থানায়। নারী-পুরুষ সবাই অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করছেন ওসির রুমে।
এই থানা এলাকার বিভিন্নস্থানে মাদক ও জুয়ার আসর বসলেও তিনি যোগদানের পরে বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে তার যোগ্যতাবলে ধীরে ধীরে অপরাধমূলক কর্মকান্ড নিমূলেরপথে। এ কারনে এই থানা এলাকার সাধারন জনগনের প্রসংসা কুড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারিতে ডাসার থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন হাসানুজ্জামান। তার যোগদানের পরই যেন রাতারাতি পাল্টে গেছে এই থানার দৃশ্যপট। থানার ভেতরে বাইরে পরিবর্তন লক্ষণীয়। মাদক স¤্রাট ও স্ত্রাসীরা এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে। পাড়ায় পাড়ায় জুয়ার আসরও উধাও। রাতে হাট-বাজারের দোকানপাটে চুরি বন্ধ হয়েছে, অপরাধ কমেছে। তিনি তার থানা এলাকার ৫টি ইউনিয়নের দুইশত মসজিদের ঈমামদের নিয়ে মাদক, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, কিশোরগ্যাং, এবং মসজিদে মসজিদে সচেতনতা মূলক সভা পরিচালনা করে আসছেন।
থানা এলাকার বাঁশতলা ও কাঠালতলা বাজারে কৌশলে যানজট তৈরি করে সিরিয়াল পর্যন্ত বিক্রি করত চাঁদাবাজরা। এখন যানজটমুক্ত এইসব বাজার এলাকা। এক ঘণ্টার জন্যও যানজটের দেখা মেলে না। সিএজি অটোচালকরাও ওসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। চালকরা বলেন, এখন আর সিএনজি-অটোরিকশার সিরিয়ালের জন্য চাঁদা দিতে হয় না।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফরহাদ হোসেন মাতুব্বর দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ডাসার থানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এত সুন্দর কর্মযজ্ঞ কখনো দেখিনি। থানার বর্তমান কাজ দেখে মনটা ভরে যায়। পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বেড়ে যায়।
আওয়ামী লীগ নেতা মুন্সি মোঃ মাহবুবুর রহমান মামুন বলেন, জনপ্রত্যাশা পূরণে এ ওসির ভূমিকা প্রশংসনীয়। আগে থানার ভেতরে ঢুকতে অনুমতি নিতে হতো। অনেক সময় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এখন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় না। থানা পুলিশ এখন আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।
ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান সাংবাদিক মোঃ জাফরুল হাসানকে বলেন, আমি ডাসার থানায় এসেই সমস্যার মূলে হাত দেই। এক্ষেত্রে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম বার ও মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মস্তফা রাসেল পিপিএমবারের দিক নির্দেশনায় আমি এ কাজ করে আসছি। এবং তাদের দিকনির্দেশনাগুলো যথাযথ মেনে চলার চেষ্টা করে কাজ করেছি। তিনি আরো বলেন, আমি যোগদান করি চলতি বছরের জানুয়ারিতে। এ থানায় যোগদানের পর জানুযারি ২১ইং থেকে আগস্ট ২১ ইং পর্যন্ত ৬১টি বিভিন্ন ধরনের মামলা হয়েছে। কোন মামলা মূলতবী নেই। এবং জানুয়ারি ২১ইং থেকে আগস্ট ২১ ইং পর্যন্ত ১৪টি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে । এই ১৪টি মামলাই শেষ হয়েছে। কোন মামলা মূলতবী নেই। অত্র থানায় পূর্বে মোট ১১০টি গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলতবী ছিল। জানুয়ারি ২১ইং থেকে আগস্ট ২১ইং পর্যন্ত জিআর-৬৮, সিআর-৪১, জিআর সভা-০৬, সিআর সভা-০২, সর্বমোট ১১৭টি গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রাপ্তি হয়ে পূর্বের মূলতবীসহ জিআর-১০২, সিআর-৫৬, জিআর-সাজা-১০, সিআর সাজা-৫, সর্বমোট ১৭৩টি গ্রেফতারি পরোয়ানা নিস্পত্তি করা হয়েছে। বর্তমান জিআর-১৬, সিআর-০৬, জিআর সাজা-২৩, সিআর সাজা-৯সহ মোট ৫৪টি গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলতবী আছে। আমি সেবা প্রার্থীদের সকল ধরনের সহযোগিতার জন্য থানার সকল অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যতদিন এই থানায় আছি জনগণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাব। কোনো অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।
Leave a Reply