গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন লোহাকৈর নামক এলাকায় মাজারের পাশের পুকুরে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া যায়। কাশিমপুর থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে পিবিআই এর মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত করে।
জানা যায়, ভিকটিমের নাম হুমায়ুন।তার পরিবার জানায় যে, গত ০৯/০২/২০২২ তারিখে ভিকটিম হুমায়ুন কবির, পিতা-মৃত রুস্তম আলী, সাং কাটাবাড়ী, থানাঃ রংপুর সদর, রংপুর বেলা ১১:৪৫ ঘটিকায় ইজিবাইক নিয়ে দেশীপাড়াস্থ বাসা হতে বের হয় পরবর্তীতে ফিরে আসেনা। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কাশিমপুর থানা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের কাজ শুরু করে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত আলমগীর ও শামসুলকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টুকু ও আল আমিনকে বরিশালের উজিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।এছাড়াও রফিককে সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ত করে ঘটনার বর্ননা করে।
প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, গত ০৯/০২/২০২২ তারিখ রাত আনুমানিক ২০.০০ ঘটিকায় ভিকটিম হুমায়ুন অটোরিক্সা নিয়ে সালনা ব্রিজের কাছে অবস্থানকালে আসামি আল-আমিন (ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য ছদ্মবেশী ঝালমুড়ি বিক্রেতা ) এর কাছ থেকে ঝালমুড়ি কিনে খায় । কৌশলে আল আমিন ঝালমুড়ির সাথে ঘুমের ওষুধ (লিকুইড) মিশিয়ে নিহত অটোচালক হুমায়ুনের কাছে বিক্রি করে এবং ঝালমুড়ি খেয়ে ভিকটিম হুমায়ুন যাত্রী হিসেবে শামসুল ও টুকু কে নিয়ে অটোরিক্সায় করে অন্যান্য চান্দনা চৌরাস্তা হয়ে শিববাড়ি মোড়ে এসে ঘুরিয়ে চৌরাস্তা হয়ে কোনাবাড়ির কাছাকছি ফ্লাইওভারের কাছে আসলে ভিকটিম অচেতন হয়ে গেলে আসামী শামসুল অটো এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
অন্যদিকে যাত্রী বেশে শামসুল, আসামি টুকু হাফিজ (মূল হোতা) অন্য আসামীদের সাথে আলমগীরের সিএনজিতে উঠে ভিকটিমের ইজিবাইক অনুসরণ করে। কোনাবাড়ির কাছাকছি ফ্লাইওভারের কাছ থেকে আসামীরা ভিকটিমের অটোরিক্সার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মৌচাক পার হয়ে লোহাকৈর মাজার রোডের নিকটে পৌছালে তারা ভিকটিমের পকেট হতে টাকা ও মোবাইল রেখে অটো থেকে ধরে রাস্তায় পাশে নামিয়ে রেখে অটো নিয়ে কাশিমপুর থানার জিরানী এলাকায় যায় ।অটোরিক্সা রেখে রাত ১২ টার দিকে ভিকটিমের অবস্থা দেখতে আলমগীরের সিএনজি যোগে আসামীরা লোহাকৈর মাজারের নিকট আসে, সেখানে ভিকটিমকে চায়ের দোকানের সামনে সিগারেট খেতে দেখে। আসামীগণ ভিকটিমকে দেখে চিনে ফেলে এবং এনিয়ে পরবর্তীতে ঝামেলা হতে পারে ভেবে চায়ের দোকান বন্ধ হলে আসামীর ভিকটিমকে কৌশলে ডেকে পুকুরঘাটে নিয়ে ধাক্কা মেরে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।
কাশিমপুর ও বরিশাল থেকে গ্রেফতার করা আসামীরা হলঃ ১। আলমগীর (৩০), পিতা- খোরশেদ আলম,সাং লক্ষীপুর গুচ্ছগড়াম, ঠাণাঃ মুরাদনগর ,জেলা- কুমিল্লা। (এ/পি- আমবাগ, কোনাবাড়ি) পেশা- সিএনজি চালক ও অটোরিকশা ছিনতাইকারী । ২। শামসুল (৩২), পিতা- নুরুল, সাং-বাউখোলা ঘোনাপাড়া, থানাঃআতাইকোলা ,জেলাঃ পাবনা। (এ/পি-পানিশাইল, কাশিমপুর)। পেশা- অটোরিকশা ছিনতাইকারী এবং মাদক সেবী। ৩। মোঃ হাফিজুর রহমান@টুকু @হাফিজ পিতা- মৃত হাবিবুর রহমান,সাং বড়তা, উজিরপুর, বরিশাল ৪। মোঃ আলমামুন সরদার (আল-আমীন) , পিতাঃ আবদুল হাকিম সরদার, সাং গাববাড়ী সরদারবাড়ী, থানাঃ উজিরপুর , জেলাঃ বরিশাল। ৫। রফিকুল ইসলাম(৩৪), পিতাঃ মৃত আবদুর রশিদ, সাং পালোরা, থানা-কেন্দুয়া, জেলাঃ নেত্রকোনা। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। উদ্ধারঃ লুণ্ঠিত অটোরিক্সা, ভিক্টিমের মোবাইল, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি, বিভিন্ন সময়ে লুণ্ঠিত বিভিন্ন ইজিবাইকের খণ্ডিত অংশ সহ, ঝাল-মুড়ি বিক্রির উপকরণ, অটোরিকশার খোলা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র ও রঙ করার উপকরণ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জিএমপি।
Leave a Reply