পঙ্কজ কুন্ডু স্টাফ রিপোর্টার।
গৌরনদীতে বিয়ের দাবিতে তীব্রতাপদাহ উপেক্ষা করে প্রেমিকের বাড়িতে (৩-মাসের) গর্ভবতী অবস্থায় হাবিবা আক্তার (১৮) অনশনে বসার ঘটনা ঘটেছে।
গত বৃহস্পতিবার (০২-মে) দুপুর ৩টা থেকে শুরু করে, শনিবার রাত (১০টা) পযর্ন্ত অনশনে অবস্থান করে আসছেন। গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ ধানডোবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাতে গৌরনদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় গন্যমান্যদের উপস্থিতির মাধ্যমে সামাজিক ভাবে স্বীকৃতি পেতে পারে, সময় নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের গাডিয়ান ও গন্যমান্য ব্যক্তি মাধ্যমে মীমাংসার ব্যবস্থা করা হয়।
অভিযুক্ত প্রেমিকের নাম ইমরান মোল্লা (২৫)। তিনি দক্ষিণ ধানডোবা গ্রামের সাদ্দাম বাজারের মুদি ব্যবসায়ী খলিল মোল্লার ছেলে।
অনশনরত ওই তরুণী বলেন, প্রায় এক বছর আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইমরান মোল্লার সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ঢাকা নিয়ে চাকুরী দিয়ে কুরিল বিশ্বরোড এলাকায় একটি ভাড়াবাসা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় গতচার মাস জীবন যাপন করছি আমরা দুজনে। গত একমাস আগে কাজের বাহানায় ইমরান ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ীতে চলে আসার পর মোবাইল ফোনে আমার সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন, আমার গর্ভে সন্তান আসার খবর জানাতে ইমরান আমাকে অপারেশন করার চাপ দিতে থাকে, এক পর্যায় আমি অপারেশন করাতে অস্বীকৃতি জানালে ইমরান আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে গ্রামে এসে জানতে পারি,বাবা মায়ের পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করে ঘর সংসার করছে ইমরান। আমার গর্ভে তিন মাসের সন্তান, আমাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়ে বিয়ে করছে না। তাই তার বাড়িতে এসে উঠি। পরে পুলিশ আসলে বিষয়টি তাদের খুলে বলি।
এ বিষয়ে ওই প্রেমিক যুবকের বাবা সাদ্দাম বাজারের মুদি ব্যবসায়ী খলিল মোল্লা প্রসাশন ও স্থানীয় গন্যমান্য এবং সংবাদ কর্মীর উপস্থিতিতে শিকার করেন বলেন, আমার ছেলে যদি প্রকৃত দোষী হয় তা হলে তাদের সামাজিক ভাবে বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে,যেহেতু আমার ছেলে (ইমরান) ঢাকায় অবস্থান করছে,এবং ইমরানের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায়,সঠিক ভাবে বলতে পারবোনা ইমরান এখন কোথায় অবস্থান করছেন,আমার ছেলের সাথে যোগাযোগ করে বাড়ীতে ফিরিয়ে আনতে শনিবার পযর্ন্ত সময় চেয়ে বসেন খলিল মোল্লা। প্রেমিক ইমরান পলাতক থাকায় উপস্থিত গন্যমান্যদের সম্মিলিত পর্যালোচণায় শনিবার রাত পযর্ন্ত খলিল মোল্লাকে সময় বেধে দেওয়া পর। প্রসাশন ও স্থানীয় গন্যমান্য এবং সংবাদ কর্মীর উপস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যার পর সকলের উপস্থিতে মিমাংসার মাধ্যমে অনশনরত তিন মাসের গর্ভবতী হাবিবাকে সামাজিক ভাবে বিবাহর বন্ধনে স্কীকৃতি দিয়ে পুত্রবধু হিসেবে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রæতি দেয় খলিল মোল্লা।
পরে এমন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় সাদ্দাম বাজার খলিল মোল্লার বাড়ীতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয় মিমাংসার জন্য, বাড়ীতে মিমাংসার তেমন কোন ব্যবস্থা না দেখে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ হতাশা প্রকাশ করে, পরে একটানা তিনদিন অনাহার ও নিদ্রাহীন অবস্থায় দিনের তীব্রতাপদাহ আলোতে বাড়ীর আঙ্গিনায় ও রাতের আধারে পরিত্যাক্ত একটি ঘরে অনশনরত হাবিবার শিকার উক্তিতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবগ জানতে পারে, ছেলে ইমরান মোল্লাকে বাড়ীতে হাজির করতে ব্যর্থ হয়ে মিমাংসার প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা করেনি খলিল মোল্লা।
হাবিবা আর বলেন, ছেলে ইমরানকে শনিবার বাড়ীতে উপস্থিত না করে, পুত্রবধু হিসেবে আমাকে অস্কীকৃতি জানাতে ইমরানের পরিবার বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করে,এবং অন্য লোক দিয়ে আমাকে ভয়ভীতি হুমকি ও টাকার প্রলোভ দিতে থাকে আমি তাতে অস্কীকৃতি জানালে, ইমরানের চাচা জলিল মোল্লা নেতৃত্বে আমার চরিত্র নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও হুমকি দিয়ে, রাতের আধারে বাড়ীর লোকজন নিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়ে মাথা ও বুকে ঘুষি ও তলপেটে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে সবাই মিলে আমাকে পাড়াতে তাকে তাহাদের হামলায় আমি গুরুতরভাবে জখম হয়ে, আমার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে এমন অবস্থায় আমি ডাক চিৎকার দিতে দিতে অজ্ঞান হয়ে যাই।পরে জ্ঞান ফিরে দেখি আমি গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি শরীরে ও পেটে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছি।
গৌরনদী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে, গর্ভবতী কিশোরীর বিয়ের দাবীতে অনশনের অভিযোগ জেনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি। তবে মামলা প্রক্রিয়াধীন অভিযোগে সত্যতা পেলে অভিযুক্ত ইমরান মোল্লা ও হামলাকারী বিরুদ্ধে আইনগত যথাযত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান।
Leave a Reply