সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাচারকৃত অর্ধলক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৫মেঃটন চোরাই কয়লা বোঝাই ১টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ ২জন মাঝিকে আনসার সদস্যরা আটক করার পর রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় পুরো জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এব্যাপারে আজ শনিবার (৪ সেপ্টেম্ভর) দুপুর ৩টায় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি রায়হান কবির বলেন- টাঙ্গুয়ার হাওরের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা অবৈধ কয়লা ও নৌকাসহ ২ মাঝিকে আটক করার পর কেন ছেড়ে দিয়েছে তার কারণ দর্শনোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এধরণের ঘটনা যেন পুনঃরায় আর না ঘটে সেজন্য এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধ করতে সকলের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো গতকাল শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্ভর) ভোররাত থেকে উপজেলার বালিয়াঘাট ও চারাগঁাও সীমান্তের লাকমা, লালঘাট, বাঁশতলা ও এলসি পয়েন্ট এলাকা দিয়ে সোর্স ইয়াবা কালাম, রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, লেংড়া জামাল, একদিল মিয়া, কদ্দুস মিয়া, খোকন মিয়া, মানিক মিয়া, হারুন মিয়া, বাবুল মিয়া, আনোয়ার মিয়া, শহিদুল্লাহ, করিম মিয়া, এরশাদ মিয়া, কাসেম মিয়াগং ভারত থেকে পৃথক ভাবে প্রায় ১২০মেঃটন কয়লা, চাল, বাঁস ও কাঠসহ বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য পাচার করে।
পরে সোর্স ইয়াবা কালাম পাচারকৃত মালামালের মধ্যে ১বস্তা (৫০কেজি) চোরাই কয়লা থেকে বালিয়াঘাট ক্যাম্পের নামে ১শত টাকা, সোর্স রমজান মিয়া ১নৌকা কয়লা (১২মেঃটন) থেকে চারাগাঁও ক্যাম্পের এফএস সামসু ও নায়েক সুবেদারের নামে ৬হাজার টাকা করে চঁাদা নিয়ে ৫টি ইঞ্জিনের নৌকায় প্রায় ৬০মেঃটন কয়লা বোঝাই করে চোরাকারবারী একদিল মিয়া, মানিক মিয়া ও খোকন মিয়ার মাধ্যমে টাঙ্গুয়ার হাওর দিয়ে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার সদরের মনতলা এলাকার কয়লা ব্যবসায়ী আজিজ মিয়া ও সাজু মিয়া ডিপুতে পাঠায়।
এই খবর পেয়ে সকাল অনুমান ৭টায় টাঙ্গুয়ার হাওরের দায়িত্বে থাকা রামসিংপুর ক্যাম্পের আনসার সদস্যরা অভিযান চালিয়ে হাওর থেকে ৫মেঃটন চোরাই কয়লা বোঝাই ১টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ ২জন মাঝিকে আটক করে। আর এঘটনাটি তাৎক্ষনিক ভাবে জানাজানি হওয়ার পর বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও সীমান্তের চোরাকারবারীরা দৌড়ঝাপ শুরু করে নৌকা ও কয়লাসহ ২ মাঝিকে উদ্ধার করার জন্য।
এরপর রহস্যজনক কারণে বেলা ১১টায় অবৈধ চোরাই কয়লা বোঝাই নৌকাসহ ২জনকে ছেড়ে দেয় আনসার সদস্যরা। আর প্রতিদিন ভারত থেকে পঁাচারকৃত চোরাই কয়লা নৌকা বোঝাই করে টাঙ্গুয়ার হাওর দিয়ে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানাগেছে।
এব্যাপারে টাঙ্গুয়ার হাওরের রামসিংপুর আনসার ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা কমান্ডার পিসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন- এলাকার লোকজন অনুরোধ করার কারণে লিখিত রেখে নৌকা ও কয়লাসহ লোক ছেড়ে দিয়েছি। টাঙ্গুয়ার হাওর অনেক বড়। তাই সব দিকে খেয়াল রাখা সম্ভব হয়না।
Leave a Reply