ঝালকাঠির ছত্রকান্দায় বাস পুকুরে পড়ে ১৭ জনের প্রাণহানির ঘটনায় চালকের খামখেয়ালিপনাসহ ৩ কারণ শনাক্ত করেছে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩আগস্ট) সকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুন শিবলী।
মোহাম্মদ মামুন শিবলী, দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির জন্য ১ম- বাসচালকের খামখেয়ালিপনা, ২য়- চালকের অপেশাদারি আচরণ এবং ৩য়- বিধি ভেঙে সড়কের পাশে বড় পুকুর খনন করা। দুর্ঘটনা কবলিত “বাসার স্মৃতি” বাসের ফিটনেস থাকলেও চালক মোহন খানের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল হালকা গাড়ি চালানোর। কিন্তু তিনি বাসের মতো একটি ভারি যানবাহন চালাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।
মামুন শিবলী আরও জানান, মালিক পক্ষের উচিত কার হাতে গাড়ি দিচ্ছেন তার যথাযথ মনিটরিং করা। তদন্তকারী আরও দুটি সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চালকের খামখেয়ালিপনা। দুর্ঘটনার আগে চালক যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক করছিলেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে সড়কের পাশে বড় ও গভীর পুকুরটি মৃত্যুকূপ হিসেবে রূপ নিয়েছে। ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর বা মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা সড়কটি অত্যন্ত পুরাতন। এ সড়ক প্রশস্ত না করায় জমির মালিকরা সেখানে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করেছে। সড়কটির দুই পাশে ১০-১২ ফুট জমি অধিগ্রহণ করা থাকলে দুর্ঘটনা ঘটলেও এত প্রাণহানি হতো না।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ঝালকাঠির উপ-পরিচালক ফিরোজ কুতুবী জানান, আমাদের তদন্ত কাজ প্রায় শেষ। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে দুর্ঘটনার কারণ আর প্রতিবন্ধকতা সব বিষয় উঠে এসেছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বলেন, প্রতিবেদন পেয়েছি। সুপারিশ অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি জানান, নিহতদের দাফনের জন্য আইজিপি স্যারের বরাদ্দ থেকে এক লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ, গত ২২ জুলাই সকাল ১০টার দিকে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ছত্রকান্দা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস সড়কের পাশের পুকুরে পড়ে যায়। এতে ১৭ জন নিহত ও অন্তত ৩৫ জন আহত হন।
Leave a Reply