উজিরপুর (বরিশাল) সংবাদদাতাঃ
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বন্দর (মাছ বাজার ব্রীজ সংলগ্ন) অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসার নামে সাধারন মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করে আসছে স্থানীয় মাহাবুবুল ইসলাম খান । ডেণ্টাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিচয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে এক শিক্ষানবীশ চিকিৎসক। জরুরী ভিত্তিতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে অবৈধ ডেন্টাল কেয়ার বন্ধ করে প্রতারনার হাত তেকে সাধারন মানুষকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
স্থানীয়রা জানান, আধুনিক ডেন্টাল ষরঞ্জাম, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সরকারি অনুমোদন কিছুই নেই। প্রতিষ্ঠানটির হচ্ছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বন্দরে তামিম ডেন্টাল কেয়ার। দুটি কক্ষ, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সমান-১২/১৩ ফুট আয়তনের দুই কক্ষ নিয়ে গড়ে উঠেছে ডেন্টাল ক্লিনিক । এমনকি এখানে একজন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক থাকলেও এই প্রতিষ্ঠানটির নেই সরকারি অনুমোদন । ডেন্টাল কেয়ারের নামে বছরের পর বছর প্রতারনের মাধ্যমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সিভিল সার্জন অফিসের নীতিমালা অনুযায়ী, ডেন্টাল ক্লিনিক পরিচালনা করতে হলে বিডিএস চিকিৎসক ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান নিয়োগ, প্রয়োজনীয় রি-এজেন্ট, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও স্বাস্থ্য বিভাগের বৈধ অনুমতিপত্র এবং এক হাজার টাকার ট্রেজারি চালান জমা আবশ্যক অথচ এর একটি শর্তও পূরণ করতে হবে কিন্তু তামিম ডেন্টাল কেয়ারের কিছুই নাই।
তামিম ডেন্টাল কেয়ারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো যন্ত্রপাতি বা ল্যাবরেটরি নেই।
গত মঙ্গলবার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বন্দরে তামিম ডেন্টাল কেয়ার স্বত্বাধিকারী মাহাবুল হোসেন খান এর সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৪ বছর নূর মেডিকেল ডেন্টাল কেয়ারের স্বত্বাধিকারী পল্লিচিকিৎসক আব্দুল করিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন মাহাবুব খান। গত ছয়-সাত বছর ধরে তিনি তামিম ডেন্টাল কেয়ার নামে প্রেসক্রিপশন দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য তাঁর বৈধ কোনো কাগজ নেই বলে স্বীকার করেন মাহাবুব খান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে কেউ আসেন কিনা জানতে চাইলে মাহাবুল বলেন, প্রতি বছর সিভিল সার্জন অফিস থেকে নোটিশ দেয়। এরপর তাঁর অফিসে গিয়ে দেখা করলে সব ঠিক হয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা শওকত আলী জানান, ২০২০ সালের শুরুর দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে তাঁদের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী তদন্ত করে একটি ডেন্টাল ক্লিনিকেরও লাইসেন্সসহ কোনো কাগজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একই বছরের ফেব্রæয়ারিতে সিভিল সার্জন অফিসে রিপোর্ট পাঠানো হয়। এ ছাড়া চলতি বছরের ইউএনওকে প্রতিষ্ঠানগুলো জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান বলেন, সব ডেন্টাল ক্লিনিকের আউটডোর হিসেবে নিবন্ধিত হওয়া বাধ্যতামূলক। অবশ্যই একজন বিডিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসককে সেখানে দায়িত্বে থাকতে হবে। তামিম ডেন্টাল কেয়ারের অনুমোদন নেই, ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.শাখাওয়াত হোসেন বলেন, খোজ নিয়ে অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.জাফর আহম্মেদ বলেন , এ বিষয়ে কেউ কিছু আমাদের জানায়নি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সহায়তা চাইলে আমরা সহায়তা করব।
Leave a Reply